Skip to main content

প্রেম

প্রেম

সুরোজিৎ ঘোষ

সেই বহুদিন আগে থেকে প্রেমে পড়েছি,
প্রথমে নীললোহিতের নীরা,
তারপর রবীন্দ্র সঙ্গীত আর পাহাড়ের কুয়াশা মাখা আঁকাবাঁকা পথ।
ধীরে ধীরে আরও প্রেমে পড়েছি,
নদীর ধারে মস্ত বটের পিছনে পড়ন্ত সূর্য,
আর বৈশাখের ঝড়-বৃষ্টি।
যখন বয়স কিছুটা বাড়ল, আবার প্রেমে পড়লাম;
সেদিন পথভ্রান্ত জন্মান্ধকে রাস্তা পার করে দেওয়া মেয়েটার,
আবার কারো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ট্রেনের সিট ছেড়ে দেওয়াটাও থেমে থাকেনি।
তেমনই থেমে থাকেনি আমার বারেবারে প্রেমে পড়ার অভ্যাসটা!
বাড়িতে মা না থাকলে, আমার খেয়াল রাখা পাশের বাড়ির বৌদির প্রেমে পড়েছি,
ভাষা সাহিত্যের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রিয় ছাত্রী ‘মিষ্টির’ প্রেমে পড়েছি।
নারকেল গাছে বসে থাকা মাছরাঙা পাখির দিকে তাকিয়ে থেকেছি মুগ্ধতায়,
দুপুরের পাতে সর্ষে-ইলিশের প্রেমে পড়েছি,
আর বিরহে, প্রেমে পড়েছি রঙিন গ্লাসের।
শীতের কাঁপুনিতে সিগারেটকে আপন করেছি,
সে অভ্যেসে এখনো স্বচ্ছ প্রেমের প্রকাশ!
যেন আমার ঠোঁটের স্পর্শ পাওয়ার জন্যেই সে তৈরি,
অথচ  যখন সত্যিকারের নীরা প্রশ্ন করে, ‘প্রেম আসলে কী?’
আমি উত্তর দিতে পারিনা!


Comments

Popular posts from this blog

আমরা গরিব তাই

|| আমরা গরীব তাই || আমরা গরীব তাই মেনে নিতে হয়,। কাজ করে খেতে হবে ― মেধা পড়ে রয়; জীবন অভাবে ভরা, কিছু আয় চাই, কলেজে তাই আর পড়া হয় নাই। সকালেতে মাঠে যাই, বিকেলেতে দুঃখ, আগামীকাল ভাবার পরে চেহারাটা রুক্ষ। বুক ভরা স্বপ্ন, সফলতা পাব ঠিক! ― এই আশাতে বাঁচি, রুপকথার নিরিখ। বুকে বল মুখে হাসি, ভেতরটা পুড়ে ছাই, কিছুই করার নেই, আমরা গরীব তাই।। © সুরোজিৎ অবসাদে অবসর কাটানোর থেকে, কবিতা লেখাই ভালো।

প্রেমিকেরা অপেক্ষায় থাকে

প্রেমিকেরা অপেক্ষায় থাকে, বাগানবাড়ির সামনে তোমায় প্রথম দেখেছি, প্রেমে পড়েছি আরও অনেক পরে; তোমার রুপের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি আমি, যেমন গাছেরা মাটিকে আঁকড়ে ধরে। ঠিক কত বছর পার হয়ে যায়— খেয়াল থাকে না, অপেক্ষা থাকে! বাগান বাড়ির রাস্তা একা থেকে যায়; প্রেমিক খুঁজতে থাকে নতুন বৈশাখ। প্রশান্ত যেটুকু সময় ছিল— গোধুলী-বেলার লালচে আকাশ জুড়ে, কালবৈশাখী ঝড়ে এলোমেলো হতে থাকে, প্রেমিক এখনও অপেক্ষায় গঙ্গা নদীর তীরে।

প্রেম-পর্দা

প্রেম- পর্দা সুরোজিৎ ঘোষ প্রথম  পরিচ্ছেদ   উন্মুক্ত আকাশের ষোলোআনাই কালো মেঘে ঢাকা পরে গেছে। সূর্যালোকের চিহ্নমাত্র নেই। এ যেন মধ্যাহ্নের পরিবর্তে অনাবশ্যক এক সন্ধ্যার আগমন। সুজাতা শয়ন কক্ষে শায়িতা । ওর সতেজ মন আংশিকভাবে বিলিন হয়ে গেছে পাড়ার ছেলে সুনীলের সন্ধানে। ওর মনকক্ষেও অপ্রাকৃতিক ঝোড়ো হাওয়ার ডামাডোল চলছে। শিহরিয়া হয়ে মাঝেমাঝে ও নরম কোলবালিশটাকে জড়িয়ে ধরছে। আজ ও সুনীলের বক্ষে মিলিয়ে যেতে চায় নির্দ্ধিধায়। সমস্ত গন্ডি পার করে মনের সংকীর্ণতাকে পাত্তা না দিয়ে খোলা মাঠে ভিজতে চায়, ভেজা সবুজাভ ঘাসে পা ফেলে সুনীলের স্পর্শ অনুভব করতে চায়, সমস্ত কিছু উজাড় করে আত্মনিয়োগ করতে চায় অযৌক্তিক এক সংযমে। কালো আকাশের নীচে-সবুজ ঘাসের ফাঁকে-নীল নদীর তীরে সুজাতা শুধু সুনীলকেই চায়। এই জীবনে-এই রুপে-এই যৌবনে শুধু সুনীলেরই অধিকার। যেন আজ বাতাসে বাতাসে প্রেমের বিষাক্ত কোনো ভাইরাস মিশে গেছে, যেটার প্রভাবে হয়তো সুজাতার যৌন উদ্দীপনা মাত্রা ছাড়িয়েছে!      আসলে আজকের আবহাওয়াটাই এমন। সকাল থেকে বেশ কয়েকবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়ে গেল। আর বর্ষার আবহাওয়া মানেই রোমান্সের চরম সময়। য...